মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ পূর্বাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

জ্বালাতঙ্ক হলে করনীয়

মেঘনাপোষ্ট ডেস্করিপোর্ট :

আক্রান্ত হলে করণীয়
♦ কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানরসহ যেকোনো বন্য প্রাণী কামড়ালে প্রথমেই কাপড় কাচার ক্ষারযুক্ত সাবান (র‌্যাবিস ভাইরাসের সেলকে গলিয়ে ফেলে ক্ষার) দিয়ে প্রবহমান পানিতে কমপক্ষে ১৫/২০ মিনিট ক্ষতস্থান ধুতে হবে। এতে ৭০—৮০ শতাংশ জীবাণু মারা যায়।
♦ যেকোনো আয়োডিন/অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগিয়ে কামড়ানো বা আঁচড় দেওয়ার ‘জিরো আওয়ার’—এর মধ্যে, অর্থাৎ যত দ্রুত সম্ভব টিকা দিয়ে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে হবে।
♦ কামড় যদি গভীর হয় বা রক্ত বের হয়, তবে ক্ষতস্থানে র‌্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিনসহ (আরআইজি) অ্যান্টির‌্যাবিস ভ্যাকসিন যত দ্রুত সম্ভব দিতে হবে। বেশি রক্তপাত হলে তা বন্ধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
♦ আক্রান্ত ব্যক্তির ভীতি দূর করতে হবে। জলাতঙ্কে আক্রান্ত পশুটি মেরে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।
♦ সাধারণত কামড়ানোর ৯ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে জলাতঙ্কের লক্ষণ দেখা দেয়। তাই লক্ষণ প্রকাশের আগেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

চিকিৎসা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুসারে চিকিৎসকরা তিনটি ধাপে জলাতঙ্কের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
ধাপ ১ : যদি আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বকে কোনো ক্ষত না থাকে এবং পশু যদি জিহ্বা দিয়ে চাটে, তাহলে তেমন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে ধুয়ে নিলেই হবে।
ধাপ ২ : প্রথমে ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ১৫/২০ মিনিট ক্ষতস্থান ফেনা তুলে ধুতে হবে। যদি প্রাণীটি আঁচড় দেয় এবং রক্তক্ষরণের ঘটনা না ঘটে, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চারটি ভ্যাকসিন নিতে হবে। ০.১ মিলি করে দুই বাহুতে প্রথম দিন, তৃতীয় দিন, সপ্তম দিন ও ২৮তম দিনে দিতে হয়। গর্ভবতী নারীদেরও দেওয়া যায়।
ধাপ ৩ : প্রথমে ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ১৫/২০ মিনিট ক্ষতস্থান ফেনা তুলে ধুতে হবে। যদি চামড়ার ক্ষতস্থানে কামড়ের দাগ পাওয়া যায় ও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে টিকার পাশাপাশি র‌্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিনও নিতে হয়।

যা করা যাবে না
♦ ক্ষতস্থানে কোনো সেলাইন, বরফ, চিনি, লবণ ইত্যাদি ক্ষারক পদার্থ ব্যবহার করা যাবে না।
♦ বাটিপড়া, পানপড়া, চিনিপড়া, মিছরিপড়া, ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি জলাতঙ্কের হাত থেকে কাউকে বাঁচাতে পারে না।
♦ ক্ষতস্থান কখনোই অন্য কিছু দিয়ে কাটা, চোষন করা বা ব্যান্ডেজ করা যাবে না। এতে বরং ইনফেকশন হতে পারে।
♦ ক্ষতস্থানে বরফ, ইলেকট্রিক শক দেওয়া যাবে না। হাত—পা বাঁধাও যাবে না।

জেনে রাখা দরকার
♦ জলাতঙ্কের টিকা গ্রহণে শতভাগ জলাতঙ্ক প্রতিরোধ করা যায়। মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, টঙ্গী জেনারেল হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং দেশের ৬৩টি জেলা সদরে অবস্থিত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বিনা মূল্যে জলাতঙ্কের এই টিকা প্রদান করা হয়। কামড়ানো প্রাণীর দেহে র‌্যাবিসের জীবাণু না থাকলেও টিকা নিতে কোনো অসুবিধা নেই।
♦ আগে নাভির গোড়ায় মোটা সুচ দিয়ে ১৪টি ইনজেকশন দেওয়া হতো। এখন ছোট সুচ দিয়ে চামড়ার মধ্যে ইনজেকশনের মতো টিকা নিতে হয়। এতে ব্যথা নেই বললেই চলে।
♦ সুস্থ কুকুর বা প্রাণী কামড়ালে র‌্যাবিস হয় না। র‌্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর (পাগলা কুকুর) কামড়ালে বা ক্ষতস্থানে চেটে দিলে সে ব্যক্তি র‌্যাবিসে আক্রান্ত হয়।
♦ মনে রাখতে হবে, জলাতঙ্ক হয়ে গেলে কোনো চিকিৎসা নেই। লক্ষণ প্রকাশের এক থেকে সাত দিনের মধ্যে রোগীর যতই চিকিৎসা করা হোক না কেন, শেষে সে মারা যাবে—এটা শতভাগ নিশ্চিত।
♦ কুকুর বা অন্য কোনো বন্য প্রাণী কামড়ালে পেটে বাচ্চা হয়—এ ধারণা সঠিক নয়।

কারো জলাতঙ্ক হলে
♦ রোগীর চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিকেও সতর্ক থাকতে হবে। সেবাদানকারীকেও ভ্যাকসিন নিতে হবে।
♦ আক্রান্ত রোগীর প্লেটের অবশিষ্ট খাবার খাওয়া

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com